Wednesday, September 27, 2017

      “বাঁশ এর মর্ম  কথা”
       ==============
সুচনা :
বাঁশ বাংলার একটি চিরায়িত লালিত পালিত শব্দ। এটি শুধু একটি শব্দ নয় এটি একটি গাছ ও বটে। এর আছে নানা ধরণের গুণ ও বে-গুন। বাঙালীর জীবনে বাঁশ নিয়ে আছে নানা ধরণের উপমা ও বচন। যেমন: ছেলে কিংবা মেয়েটি বাশ গাছের মত লম্বা। আবার আছে খনার বচন যেমন: নোয়ালে না কাচায় বাঁশ পাকলে করে টাশ টাশ, গোয়ায় বাঁশ হাতে হেরিকেন ইত্যাদি। এর পাতাও আমরা উপমা হিসেবে ব্যবহার করি।
ভূমিকা:
আজ জাতীয় জীবনে বাঁশ গাছ এর গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেড়েছে এর বহু বিদ ব্যবহার ও । সম্প্রতি কালে বললে ভুল হবে গত কয়েক বছর যাবত জনপ্রিয় বাঁশের কথা মানুষের মুখে মুখে বেশ আলোচনা হচ্ছে। যতটা এই গাছ টি নিয়ে আলোচনা চলছে ততটা অন্য গাছ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না; আর আলোচনা হবেই না কেন ? এর মত বহুমুখী ব্যবহার তো অন্যটির হচ্ছে না। এ আলোচনা আজ জাতীয় দৈনিক থেকে শুরু করে টিভি চ্যানেল ছাড়িয়ে জুকার বাগের ফেসবুক, টুইটার ও গুগলের ইউটিবে সয়লাব দেখা যাচ্ছে।
আকার ও আকৃতি:
বাঁশ গাছ লম্বায় ২০ থেকে ৭০/৭৫ ফিট পযন্ত হয় । এর গড়ন পাতলা ও গোলাকার। এর শরীর থেকে একপ্রকার টনি বের হয়। আর বাঁশ ব্যক্তি চাহিদার সাইজ মত ফালি ফালি করে কাটলে একে লঘি বলে।
জন্ম ও বংশ পরিচয় :
এ গাছ দলবদ্ধ ভাবে থাকে। কোনো বীজি থেকে এর জন্ম হয়না । এরা মুতা বা পোর থেকে জন্ম লাভ করে । লোকে বলে বাঁশ ভাঙ্গে নানা পক্খিতে নাম পড়ে কুক্কার। ‍ তার মানে সব পাখিই বাঁশের বংশবৃদ্ধির জন্য হুমকি ।
উপকারিতা:
মূল বিষয় হলো এর উপকারিতা। এর উপকারিতা এক -দুই দিনে লিখে শেষ করা যাবে না। তবে আজকাল এমন কোনো যায়গা নেই যেখানে এর ব্যবহার নেই। এর বহু মুখী লাভজনক ব্যবহার শুরু করছে সরকারি কাজের ঠিকাদারগণ। রেল লাইনের স্লিপারে,স্কুলের নতুন ভবন নিমাণে,সেঁতুতে সব ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাপ মারতে, কারো মৃত্যু নিশ্চিত মাথায় আঘাত করতে এর তুলনা নেই। এর প্রচুর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল ফেসবুকে দেখলাম এক ভাই শংকায় আছেন এজন্য যে, ভবিষ্যতে মানুষের দাফন কাফন করতে কবরে যে বাঁশ লাগবে তা আদৌ পাওয়া যাবে কী না ?
ঐতিহাসিক ব্যবহার :
বাঁশ নিয়ে আছে বাঙালীর জাতীয় জীবনে ঐতিহাসিক দিনও । ২৮ শে অক্টোবর ২০০৮ এই বাঁশ মানে লঘি দিয়ে হুলুস্তর কান্ড হয়েছে ঢাকা সহ সারাদেশে। পত্রিকা মারফত জানা যায় শুধু ঢাকা শহরেই ৮ থেকে ১০ জন লোক মারা হয় এই বাঁশ তথা লঘির আঘাতে। তবে আপতত এটা গৌরবেরই । কারণ বাঁশ দ্বারাই সেদিন একটি পক্ষের বিজয় নিশ্চিত হয়েছিল। 
রুপক বাঁশ :
বাঁশ এতটাই বাঙালীর জনপ্রিয় শব্দ যে, এটা বেড রুম থেকে অফিস আদালত সব খানেই ব্যবহার করা হয়।
বিজ্ঞাপনে বাঁশঃ
বিজ্ঞাপনেও বাঁশ ব্যবহার করা করা হাঁস ও বাঁশ এর তুলনা করে পণ্যের বিক্রি বাড়াতে।
পাঠ্য পুস্তকে বাঁশঃ
গণিতের গানিতিক সমস্যা সমাধান এবং জ্ঞানদানে ও বাঁশ এর উদাহরণ টানতে দেখা যায়। অবশ্য সেখানে বাঁশের গায়ে আবার তৈল মাখতে হয়। আর বানরের উপস্থিতিও সেখানে দরকার।
বাঁশের বাঁশী :
বাঁশ দিয়ে সুন্দর বাঁশীও বানানো যায় । আপনি যদি বাঁশের বাঁশীতে সুন্দর সুর তুলতে পারেন তবে প্রেমিকা পাওয়া খুবই সহজ হবে আপনার জন্য। কবিতায় ও  আমাদের জাতীয় কবি বাঁশের ব্যবহার করেছেন,“ মম এক হাতে বাঁশের বাঁশি আর এক হাতে রণতুর্য”।
উপসংহার :
জাতীয় জীবেনে বাঁশ আজ আমাদের পুজনীয় ও বরণীয় । তাই সবাই বেশি বেশি করে বাঁশ লাগান । দেশকে বাঁশ দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিন । আমার এ বাঁশ বন্ধনা আপনার ভালো না লাগলে আমার পাছায় বাঁশ দেওয়ার জন্য প্রস্তত হন !

( তারিখঃ১০/৩/১৭ইং)
লেখক : এস এম কামাল হোসেন।

No comments:

Post a Comment

A BROKEN DREAM- chapter -one

A BROKEN DREAM Status of Rule of Law, Human Rights and Democracy Justice Surendra Kumar Sinha Chief Justice (Rtd.), Supreme Court ...