Header Ads

Bangladesh Is a .....

মুসলিম বনাম হিন্দু বাংলাদেশ বনাম ভারত সম্পর্ক ।

মুসলিম বনাম হিন্দু ; বাংলাদেশ বনাম ভারত

এক.বর্তমানে আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সরকার তথা সেদেশের কতিপয় নাগরিরেক আচরণ আমাদের তথা মুসলিম বিশ্বের রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে গত দু মাস যাবৎ কাশ্মিরের কারফিউ জারি আছে শুধু কি কারফিউ? না সেথানে গত দু মাসের সহিংসতায় দুশতাধিক মুসলিম নারগকিরের প্রাণ হানী ঘটেছেবিপন্ন সেখানের মানবিকতা স্তব্ধ সকল মানবতাসম্প্রতি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশকে বিরিয়ানি পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিরিয়ানিতে গরুর মাংস মেশানো হচ্ছে কিনা, সেটাই পরীক্ষা করছে তারা পুলিশের সঙ্গে থাকছে একজন সরকারি পশুচিকিৎসকওবিজেপি শাসিত এই রাজ্যে গরুর-মাংস নিষিদ্ধ আইন করে সেখানে গো-সেবা কমিশন আর গরু জবাই বা পাচার রোখার জন্য কটি বিশেষ পুলিশ দলও তৈরি করা হয়েছে। এবার তাদের ওপর বাড়তি দায়িত্ব পড়েছে বিরিয়ানি পরীক্ষারভারতে গরুর মাংস খাওয়ার অজুহাতে ক্ষমতাসীন দলের পাণ্ডাদের বর্বরতা দিন দিন নতুন মাত্রা পাচ্ছে গত ২৪ আগস্ট,২০১৬ হারিয়ানার মুসলিম অধ্যুষিত জেলা মেওয়াটে  একদল লোক তাদের বাড়িতে ঢুকে তার বাবা -মা , চাচা-চাচিকে বেঁধে ফেলেএরপর ২০ বয়সী এক যুবতী  তার চাচাতো বোনকে(২৮) তাদের পরিবারের সবার সামনেই পালাক্রমে গণধর্ষণ করেবাবা-মা, চাচা-চাচী বর্বতার প্রতিবাদ করায় তাদের পিটিয়ে একজনকে হত্যা বাকীদের গুরতর আহত করে ধর্ষকের দল পরে অবশ্য গণমাধ্যমে মানবাধিকার সংস্থা সোচ্চার হলে পুলিশ / জনকে গ্রেফতার করে

দুই. প্রসংগত নভেম্বর, ২০১২ বাংলা একাডেমীর নতুন মিলনায়তনে ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ারএর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থবিয়ন্ড দ্য লাইন্স’-এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে কুলদীপ নায়ার কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি বলেছিলেন--ভারত-পাকিস্তানের দেশ ভাগ একটি ভুল পদক্ষেপছিল বলে মন্তব্য করে প্রস্তাব দিয়েছেন যে,হিন্দু, মুসলিম, ভারতীয়, পাকিস্তানিএসব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে এখন আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো ঐক্যবদ্ধ একটি দক্ষিণ এশিয়া গড়তে হবেতার বক্তব্যটা আজ থেকে বছর আগে হলেও আজকে এই দিনে তার সেই কথার সামর্থতা খুজে পাওয়া যায়নাআজকে তিনি তার লেখায় সেধরণের কোন লেখা বা আহব্বান দেখি না তার দেশের নাগরিকের সরকারের বতমান কার্যকলাপের শুধু মাত্র মুখে বড় বড় কথা আমাদের জ্ঞান তথা শান্তনা দেওয়াআর মুখে মুখে উদারতা দেখানো কিন্তু তাদের অন্তরে আর এক আর তাই যদি হবে আজকের এই দিনে কাশ্মির, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ,দিল্লি সহ সারা ভারতে যে সব কান্ড করছে বিজেপি সরকার তথা হিন্দু মৌলবাদী দল তা নিয়ে তাকে তো সেভাবে সোচ্চার হতে দেখিনা যেমনটি দেখি মানবাধিকার কর্মী বিদেশী সাংবাদিকদের একটুপিছনে ফিরে তাকালে দেখা যায় যে, উপমহাদেশের হিন্দুদের আচরণ বড়ই কট্টর,একঘুয়েমি মুসলিম বিদ্বেষী যেমনটি আজকে গোটা ভারতে বিদ্যমান ঠিক তেমনটি ছিল আড়াইশত বছর পূবেও ভারতীয় হিন্দুরাই প্রথম মুসলিম-বিরোধী ভূমিকায় নেমেছিলেন মুসলিমদেরকে তাদের পায়ের তলায় রাখার উদ্দেশ্যে মুসলমানদের ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ করার জন্য ব্রিটিশদের পক্ষাবলম্বন করেছিল কারণ উপমহাদেশে তারাই ছিল ব্রিটিশদের চর ব্রিটিশ শাসন আমলে তারাই ছিল বেনিফেশিয়ারী, ব্রিটিশ শাসন প্রলম্বিত করার দোসর শহীদ তিতুমীরের জমিদার বিরোধী সংগ্রাম, সিপাহী বিদ্রোহ, প্রভৃতিকে ব্যর্থ করতে কারা ব্রিটিশদের পক্ষালম্বন করেছিল? এই হিন্দুরাই অন্যদিকে মুসলমানদের স্বাধীনতার প্রেরণাকেও তারা স্বীকার করতেন না তার প্রমাণঅনুশীলন সমিতিঅনুশীলন সমিতিতে একজন মুসলমান সদস্যের নামও  খুঁজে পাওয়া যাবে না তৎকালীন নোয়াখালী জিলা স্কুলের ছাত্র সৈয়দ ওয়ালি উল্লাহ (সাহিত্যিক) মুজাফ্ফর আহমদ  সূর্যসেনের কাছে কাছে গিয়ে অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলে তাদেরকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়, কোন মুসলমানকে দলে নেয়ার সুযোগ নেই আর দলে ঢুকতে হলেমা কালি নামে শপথ নিতে হবে তারা দুজনই ব্যর্থ মনে সূর্য সেনএর কাছ থেকে ফেরত আসেন অনুশীলন সমিতির উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুশাসিত অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠিত করা এটা ছিল চরম সাম্প্রদায়িক সংগঠন তা হলে বুঝুন সাম্প্রদায়িকতার বীজ তথা মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির দাবির জন্য সম্পূর্ণরূপে কারা দায়ী

তিন
. কারা অবহেলিত পূর্ব-বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিকল্পে ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ব-বাংলা আসাম প্রদেশ গঠন করলে বাংলার অখণ্ডতার ভাওতা দিয়ে বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য আন্দোলন করে কারা উপমহাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার উন্মেষ ঘটায়? নতুন প্রদেশ হলে মুসলমানরা উপকৃত হবে, তাই বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য তারা মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা শুরু করেছিল অখণ্ড স্বাধীন ভারতে মুসলমানদেরকে ন্যূনতম অধিকার দিতে অস্বীকার করে কারা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার দাবি তুলতে বাধ্য করেছিল? কারা জিন্নার ১৪-দফাকে অস্বীকার করেছিলতারা অস্বীকার করেছেন ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা - যেখানে ভারতকে অবিভক্তি রেখে তিনটি স্ব-শাসিত ইউনিট গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়, যে প্রস্তাব কংগ্রেস মুসলিম লীগ মেনে নিয়েছিল কিন্তু পরে সবাইকে বিস্মিত করে নেহেরু কারণে কংগ্রেস সে প্রস্তাব থেকে সরে আসে কংগ্রেস প্রস্তাব অস্বীকার করার কারণেই ব্রিটিশদের পক্ষে ভারতকে বিভক্ত করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না এসব ইতিহাস কাদেরকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রমাণ করে? হিন্দু না মুসলমানদেরকে ???

চার.  ১৯০৫ সনে হিন্দুরা অখণ্ড বাংলার জন্য জান-কোরবান ছিলেন কিন্তু ১৯৪৭ সনে ভারত পাকিস্তানের বাইরে অখণ্ড স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা গঠনের জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশেম, শরৎবসু, কিরণ শংকর রায় প্রমুখের উদ্যোগকে হিন্দুরাই ব্যর্থ করেছিল নেহেরু শর্ত জুড়ে দিলেন ভারত ভাগ করতে হলে পাজ্ঞাব বাংলাকে অবশ্যই ভাগ করতে হবে, যাতে খণ্ডিত পাজ্ঞাব বাংলার যে অংশ পাকিস্তানে যোগ দেবে, তা অচিরেই ভারতের সাথে মিশে যেতে পারে

পাঁচ. গত ৪৫ বছরে ভারতীয়দের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কর্মকাণ্ড  প্রমাণ করে ১৯৭১ সনে হিন্দুরা সেই উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল এবঙ লক্ষ্য ছিল মুসলিম শক্তিকে দুর্বল ধবংস করা এবং ধীরে ধীরে আমাদের ভূখণ্ড দখল করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাদের সৈন্য চিরকাল বাংলাদেশে মোতায়েন রাখা আর বাংলাদেশ তাৎক্ষণিক তাদের পেটে না ঢুকলেও পতাকা-সর্বস্ব করদরাজ্যে পরিণত করা তথা নেপালের মত দূর্বল রাষ্ট্র করে রাখা আমরা সে চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছি
ছয়. ভারতীয় হিন্দুরা মুখে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে বাস্তবে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করেছে গত ৬৯ বছরে ভারতীয় মুসলমান, বিশেষত কাশ্মীরীদের সাথে, শিখদের সাথে, এমনকি হিন্দু হওয়া সত্বেও দলিত- হরিজনদের সাথে যে আচরণ করেছে এবং সর্বশেষ মুসলমানদের সাথে গরু খাওয়া নিয়ে যা করছে তাতে কোন মুখে তাদের ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা আসে বরং আমরা হলাম সত্যিকারে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র এবং মনে প্রাণে আমাদের দেশের শতকরা একশত ভাগ মুসলামনই ধর্মনিরপেক্ষ যা দেথা যায় রাষ্ট্র সৃষ্টি লগ্ন থেকে আমাদের এদেশে সংখালঘু হিন্দুদের জন্য পুজায় বন্ধ থাকে থেকে দিন আর ভারতে সংখ্যালঘু মুসলামনদের জন্য ঈদে বন্ধ থাকে থেকে দিন আমাদের দেশে জন্মঅষ্টমীর জন্য সরকারি ছুটি থাকে কিন্তু ভারতে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে কোন সরকারি ছুটি থাকে নাআর মুসলামানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল আযহায় তো গরু কোরবানী নিষিদ্ধই রয়েছে ভারতে বাহ! কি চমৎকার তাদের ধর্ম নিরপেক্ষতার উদাহরণ!

সাত. ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে বাংলাদেশের সাথে যে আচরণ করেছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে, তাদের মতো কট্টর সাম্প্রদায়িক বর্তমান বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই ব্রিটিশ আমলে তারা যতোখানি সাম্প্রদায়িক ছিলে, ’৪৭ সনের পর থেকে আপনাদের সাম্প্রদায়িক হিংস্রতা হাজারগুণ বেড়েছে তাদের সাম্প্রদায়িক হিংস্রতা, মুসলিম-বিদ্বেষ এবং মুসলিমদের পায়ের নিচে রাখার মানসিকতার কারণেই ১৯৪৭ সনে পূর্ব-বাংলার মুসলমানরা ভারতের পরিবর্তে পাকিস্তানের সাথে গিয়েছিল

আট. ১৯৪৭ সনে তাদের সাথে না গিয়ে আমাদের পূর্ব-পুরুষরা সঠিক কাজটি করেছিলেন বলেই ১৯৭১ সনে আমরা অনেক ত্যাগের বিনিময়েএক নদী রক্তপেরিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অধিকারী হয়েছি সেদিন পাকিস্তানের পরিবর্তে ভারতের সাথে মিশে গেলে আমাদের অস্তিত্ব থাকতো না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তৈরি হতো না বাংলাদেশ নামক কোন দেশ হতো না হতো না প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ সুপ্রিমকোর্ট এতো মন্ত্রী এমপি আমলা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার শিল্পপতি শিল্পী-সাহিত্যিক কবি সাংবাদিক হতো না হতো না এতোগুলো বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, হাজারো ধরনের প্রতিষ্ঠান এমনকি  তৈরি হতো না ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, ইত্তেফাক থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিন নামক পত্রিকা কিছুই হতো না, যেমনটি হতে পারেনি কাশ্মিরের অধিবাসীরা আমরা দেখতাম না জিয়াউর রহমান, হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া,জননেত্রী শেখ হাসিনাআমরা তখন সিংহ ভাগই হতাম ভারতীয়দের দিন-মজুর, কুলি, ঝি-চাকর, দর্জ্জি, জুগালি রাজমিস্ত্রী, কাঠমিস্ত্রী, দারোয়ান, বড় জোর  স্কুল শিক্ষক - যেমনটি হয়েছেন পশ্চিম বাংলাসহ ভারতীয় মুসলমানরা প্রায় এককোটি বাংলাদেশী বিদেশে যেতে পারতো না, যেমনটি পারছে না পশ্চিম বাংলাসহ তাদের দখলে থাকা আমাদের প্রতিবেশি সাতটি রাজ্যের অধিবাসীরা আমাদের ঘরে ঘরে টিভিসেট, ফ্রিজ, হাতে হাতে মোবাইল ফোন, গ্রামে গ্রামে পাকা সড়ক - সব কিছুই থাকতো না  একথা আজ  দিবালোকের মত প্রতীয়মনা দেখা যায়

নয়. প্রসঙ্গে  একটি উদাহরণ দিতে চাই একুশে আগষ্ট, ২০১৪ সালে দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত  উদ্ধৃতি থেকে যেখানে বিশ আগস্ট,২০০৪ সনে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সার্বজনীন পূজা উদযপান কমিটির সভায় সংগঠনটির জনৈক কর্মকর্তার ক্ষোভ  করে বলেছেন, হিন্দুদের বাড়িঘরে এখন আর মুসলিম চাকর-বাকর পাওয়া যায় না মুসলিমরা এখন আর আমাদের বাড়িতে কাজ করতে চায় না এই দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ১৯৪৭ সনের পর  থেকে

দশ. ভারতীয়রা আমাদের সুখ সম্মৃদ্ধিসহ্য বোধহয় সহ্য করতে পারেনা তাই আমাদের ওপর হাজারো ধরনের সমস্যা দুর্যোগের পর দুর্যোগ চাপিয়ে দিচ্ছে, যাতে আমরা সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারি তারা সৎপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ করলে আমরা এখন সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতাম অন্যদিকে তাদের  একটা ভয় আমরা সমৃদ্ধি অর্জন করলে আমাদের তিনদিকে থাকা তাদের রাজ্যগুলোর শোষিত বঞ্চিত অবহেলিত জনগণও স্বাধীনতার জন্য গর্জে উঠবে ওদের স্বাধীনতা ঠেকানো জন্য তারা নানা ফ্রন্টে আমাদের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে নানা সময় নানা ভাবে বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে কখনও আবার বিশেষ পণ্য নিষিদ্ধ করছে আবার কখনও চড়া দামে আমাদের দিচ্ছে সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তো স্পষ্ট করেই বি এস এফ জওয়ানদের বলেছেন সীমান্তে পাহাড়া চৌকি এত বাড়ান যে একটা গরুও  যেন বাঙলাদেশে না যেতে পারে আর  তাতে খানে (বাংলাদেশে)গরুর মাংসের দাম যেন ৭০ থেকে ৮০% বাড়েগরু তারা দিবে না সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু আমাদের দেশে গরুর মাংসের দাম ৮০% বাড়ুক এটা কী কোনো সৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্বরাষ্টমন্ত্রী চাইতে পারেন ?আর্থ্যাৎ তাদের মূল লক্ষ্যই হলো আমাদের দেশকে গিলে ফেলা, শোষণ করা,পরোক্ষভাবে শাষণ করা আমাদেরকে আবার৪৭-পূর্ব মুটে-মজুরে পরিণত করা তাহলেই তাদের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায় এমন রাজ্যগুলোর মুক্তিযুদ্ধ আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যাবে আর সে কথারই গন্ধ পাওয়া যায় মাঝে মধ্যে তাদের মুখ থেকে

এগারো. তারা কখনই মুসলমানদের বন্ধু হতে পারবে না মুসলিম-বিরোধী সাম্প্রদায়িকতার খোয়াড় থেকে তারা কখনই বেরিয়ে আসতে পারবে না কারণ মুসলিম-বিরোধী সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করেই হিন্দু জাতীয়তাবাদী চেতনাকে উজ্জীবিত রেখে তারা ভারতকে বাহ্যিকভাবে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন মনস্তাত্তিকভাবে ভারত বহু আগেই ভেঙ্গে গেছে তাই জনগণের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন এবং মুসলিম বিরোধিতাকে ভারতকে অখণ্ড রাখার মহৌষধ হিসেবে বেছে নিয়েছেন মুসলিমবিরোধী চেতনার অবসান হলে তারা নিজেদের মধ্যেই শত্রু খুঁজবে তাদের এতোশত জাত-পাত-বর্ণ-ভাষা-উপভাষা-আঞ্চলিকতা ধর্মীয় বিদ্বেষ এমন প্রবল যে, ভারত কয়েকটি টুকরায় বিভক্ত হওয়াই হচ্ছে তার একমাত্র সমাধান


বারো. আমরা হয়ত অনেকেই জানিনা  তারা গত ৬৯ ধরে ভারতীয় মুসলমানদেরকে কিভাবে ঠকাচ্ছে, বঞ্চিত রাখছে, হত্যা করেছে এবং এখনো করছে পর্যন্ত কতো হাজার দাঙ্গা ঘটিয়েছে, মুসলমানদের কতো মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান তারা দখল করেছে? কতো হাজার মুসলমানকে মিথ্যে অভিযোগে বছরের পর বছর জেলে আটকে রেখেছে? মুসলমানরা ভারতের সর্বত্র আজানের সময় মাইক ব্যবহার করতে পারে কি? গরু জবাই করতে পারে কি? মুসলমানরা ভারতের কোন গ্রেডের নাগরিক - তৃতীয় না চতুর্থ? সরকারী চাকরিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব কতো? এসব আমরা কিছুই জানিনা এখনো  সারা ভারতে প্রতি দিন প্রতি ক্ষণে মুসলমানরা নির্যাতিত-নিপীড়িত এমনকি আহত নিহত হচ্ছে সেগুলো কী তারা স্বীকার করছে?বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা, মসজিদ ভেঙ্গে আবার মুসলিম হত্যার উৎসব, শিখদের স্বর্ণমন্দির আক্রমণের ঘটনা, হায়দ্রবাদে হিন্দু মুলিম দাঙ্গা,গুজরাটের দাঙ্গায় যে কত মানুষকে হত্য করা হয়েছে আর কত মানুষ যে আজো বাস্তভিটা ছাড়া তার সত্যিকারের সংখা আমরা আজও জানিনা হিন্দুত্ববাদের পাষন্ডতা কত নির্মম তা বুঝা যায় গুজরাটের সেই দাঙ্গার কথা স্মরণ করলেযেখানে একই পরিবারের নারী ,পুরুষ কিংবা তাদের শিশু সন্তানটিকেও জ্বলন্ত আগুনে হাত পা বেধে ছুড়ে ফেলে পুড়িয়ে মারে

তেরো. আমরা এখন আর ব্রিটিশ-ভারতের অশিক্ষিত মুসলমান নই, আমরা ভারতের চাকর-বাকর নই ভারতের সাথে সমান বিদ্যা-বুদ্ধি নিয়ে কথা বলার যোগ্যতাসম্পন্ন বহুলোক আমাদের দেশে তৈরী হয়েছে কিছু রাজনীতিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী , সাংস্কৃতিক কর্মীকে ক্রয় যদি তারা মনে করে বাংলাদেশ জয় করে ফেলেছে তবে তাদের ভুল ধারনাইউরোপে ভারতের মতো আগ্রাসী দেশ নেই বলেই ২৭টি দেশ নিয়ে জোট গঠিত হয়েছে তাদের কেউই দানিয়ুব নদীর পানি হতে অন্যকে বঞ্চিত করে না, কোন দেশের সীমান্তে প্রতিদিন প্রতিবেশী দেশের মানুষকে খুন করা হয় না, কোন দেশের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয় নি কিংবা প্রতিবেশীকে হত্যা করে বেড়ায় টাঙিয়ে রাখা হয় না, প্রতিবেশী দেশে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী পাঠানো হয় না অথবা চর তৈরি করে তাদের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশে গাড়ি-শিল্পকারখানা-দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয় না, কথায় কথায় শিল্পাঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি করে কিংবা শীতকালে আন্তর্জাতিক নদীর পানি হতে বঞ্চিত করে বর্ষাকালে সবগুলোর বাঁধ খুলে দিয়ে প্রতিবেশী দেশে প্রতি বছর একাধিক কৃত্রিম বন্যা তৈরি করে তার অর্থনীতিকে ধবংস করা হয় না প্রতিবেশী দেশ ভাঙার জন্য চর লেলিয়ে দেয় না প্রতিবেশী দেশের প্রেসিডেন্টদের হত্যা করা হয় নানামক গোয়েন্দা সংস্থার চক্রান্তে

চৌদ্দ.ভারতীয়তা অঞ্চলের ঐক্য চায় না, অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রন করতে চায় শহীদ জিয়াউর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি জোট গঠনের আহ্বান জানালে, কেবল ভারতীয়রাই তার বিরোধিতা করেছিলে শহীদ জিয়ার প্রস্তাবিত জোটের প্রস্তাবে ভারত-বিরোধিতা তথা আদিপত্যবাদ-বিরোধী গন্ধ আবিষ্কার করেছিলে তাই তার জীবিত অবস্থায় অন্যান্য সবদেশ রাজি থাকলেও তাদের বিরোধিতার কারণে সে জোট গঠিত হয় নিপরেতারা সার্ক গঠন করেছে, তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শর্তজুড়ে দিয়েছে সার্কের যেকোন সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত হতে হবে শর্তের কারণে তাদের এজেন্ডা নীল-নকশার বাইরে কোন সিদ্ধান্ত সার্ক গ্রহণ করতে পারে না ফলে সার্কের মূল চেতনায়ই বিলুপ্ত হয়েছে, সার্ক একটি বার্ষিক বনভোজন তথা খানাপিনা গল্পগুজবের, সর্বোপরি তাদের চর তৈরীর, আড্ডায় পরিণত হয়েছে এখন সার্কের ওপর ভর করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে আপনারা পণ্য বিক্রি, এমনকি সৈন্য মোতায়েন করার ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশের মানুষ তাদের আর বিশ্বাস করে না; আর করে না তাদের বিগত কার্যকলাপের জন্যতাদের হাজারো ধরনের চক্রান্ত-শয়তানি না করলে বাংলাদেশ দশ বছরে যে অগ্রগতি অর্জন করবে, তাতে তাদের মানুষই এখানে আসবে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সার্কের প্রস্তাবক হওয়া সত্বেও বাংলাদেশ নেপালে সার্ক সচিবালয় স্থাপনকে মেনে নিয়েছে এতে আমাদের কোন দুঃখবোধ নেই আমাদের ততটুকু উদারতা রয়েছে কিন্তু সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে স্থাপন করার দাবী তোলা হলে ভারত এর বিরোধিতা করে এটাকে তাদে দেশে স্থাপনের ব্যবস্থা করেছে

পরিশেষে: উপমহাদেশে যতো অশান্তির মূল হোতা তো তারই - অস্ত্র প্রতিযোগিতা, সন্ত্রাসী লালন, অন্যের দেশ বিচ্ছিন্ন করা, অন্য দেশকে কোনঠাসা করা, অন্যের দেশ দখল করার কিংবা দখলে রাখার উগ্র ভূত কেবল তাদের ওপরই সওয়ার হয়েছে  ফারাক্কাসহ সব বাঁধ ভেঙ্গে ফেলুক, কিংবা আন্তর্জাতিক নদীর পানি ন্যায্য হিৎসা আমাদেরকে প্রদান করুক, নতুন বাঁধ নির্মাণ কিংবা আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বন্ধ করুক, সীমান্তের বেড়া সরিয়ে নিক, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করুক, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর না চেয়ে বার্মা হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ট্রানজিট নিয়ে বার্মা হতে নাগাল্যাণ্ড তথা পূর্ব এশিয়ায় প্রবেশ করুক আর বাংলাদেশকে সার্কভূক্ত সব দেশের সাথে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করুক এদেশের সাধারন নাগরিক সবদেশের সমন্বয়ে ট্রানজিটে বিশ্বাস করে, করিডোরে নয়

                                                                     এস.এম কামাল


No comments